ফরমালিন কি?
ফরমালিন যুক্ত খাবার চেনার উপায় ফরমালডিহাইড বা মিথান্যাল(Formaldehyde, Methanal): এটি এক ধরনের রাসায়নিক যৌগ পদার্থ নামে পরিচিত । বর্ণহীন ও দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস হিসেবে এর পরিচিতি অনেক বেশি রয়েছে । এটি আগুনে জলে এবং বিষাক্ত পদার্থ এর রাসায়নিক সংকেত হচ্ছে CH20 । বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য ফরমালডিহাইড পানিতে মিশালেই সচরাচর এটি ফরমালিন নামে পরিচিত পেয়ে থাকে ।
প্রকৃতি পক্ষে ফরমালিন কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেসন এর সংমিশ্রণে তৈরী হয়ে তাকে । ১৮৫৯ সালে রুশ রসায়নবিদ আলেকজান্দর বুতলারভ ফরমালিনের অস্তিত্ব তাঁর একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরেন । পরবর্তীতে ১৮৬৯ সালে অগাস্ট উইলহেম ভন হফমেন সুন্দর ভাবে চিহ্নিত করেন । আজ আমরা ফরমালিন যুক্ত খাবার চেনার উপায় নিয়ে আলোচনা করব আপনি চাইলে খুব সহজেই ফরমালিন যুক্ত খাবার চিনতে পারবেন।
ফরমালিন যুক্ত খাবার চেনার উপায় ?
১। ফরমালিন যুক্ত কোনো খাদ্য দ্রবের মধ্যে কোনো সময় মশামাছি বসে না । তার কারণ হল এটি বিশাক্ত বলে ।
২। কোনো ফলে যদি ফরমালিন ব্যবহার করে তাহলে সেই ফলে বেশি মিষ্টি থাকে না ।
৩। ফরমালিন যুক্ত ফলমূল কোনো সময় পচেঁ না যেমন ফ্রিজের মধ্যে ফল রাখলে সহজে পঁচে না তেমন ।
দাঁতের সমস্যা ও সমাধান এর ঘরোয়া সহজ উপায়
ফরমালিন দূর করার উপায় কি ? ফরমালিন যুক্ত খাবার চেনার উপায় ?
১। সবজি রান্না করার আগে ২০ থেকে ১৫ মিনিট গরম পানির মাঝে লবণ মিশিয়ে কিছুকন তাতে ডুবিয়ে রাখুন তারপর । পানিটা সম্পূর্ণ ফেলে দিয়ে আবার পরিষ্কার পানিনিয়ে ধুয়ে নিন এবং পরে রান্না করুন ।
২। ভিনেগার ও পানি একসাথে মিশিয়ে ২৫ মিনিট মাছ মাংস ডুবিয়ে রাখলে শতকরা ১০০ ভাগ ফরমালিন নষ্ট হয়ে যায় । ভিনেগার হল একটি কার্বক্সিলিক এসিড জাতীয় এক প্রকার যৌগ এটি অ্যাসেটিক এসিডের লঘু জলীয় দ্রবণ ।
৩। ফল খাওয়ার সময় কমপক্ষে ১.১৫ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন স্বাভাবিক তাপমাএার যে পানিতে আছে সেই পানিতে । আপেল ও অন্যান্য জাতীয় ফলের ক্ষেএেও খোসা পেলে দিয়ে তারপর খাবেন ।
৪। প্রথমে চাল ধোয়া পানিতে মাছ ভিজিয়ে রাখুন ১ ঘন্টা বা তার বেশি সময় ধরে । তারপর ভলো পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে নিলে ৭০ ভাগ ফরমালিন দূর হয় ।
ছেলেদের চুলে তেল পুরুষের চুলে ব্যবহার নিয়ম ও উপযোগী তেল
৫। ১ ঘন্টার বেশী সময় মাছ/মাংস পানিতে ডুবিয়ে রাখলে শতকরা ৫৫ ভাগ ফরমালিন নষ্ট হয়ে যায় । আমাদের উচিত যেসব ফলমূলে ফরমালিন আছে তা ভালভাবে পানিতে কিছুকণ পেলে রেখে তারপর ধোয়ে তা খাওয়া উচিত ।
স্বাস্থ্যের উপর কি কি প্রভাব পেলে.?
বিষাক্ততা এবং উদ্বায়ী, অপব্যবহারের প্রেক্ষিতে ফরমালিন মানব স্বাস্থ্যর জন্যে মারাত্মক ক্ষতিকারক পদার্থ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে । ১০ জুন, ২০১১ সালে “U.S.A ন্যাশনাল টক্সিকোলজি প্রোগ্রাম” কর্তৃক ফরমালিনকে মানুষের ক্যান্সার রোগ সৃষ্টিতে সরাসরি সম্পৃক্ত বলে ঘোষনা করেছে । ইউরোপীয় বেশ কয়েকটি দেশে ফরমালিন ব্যবহার করা এবং আমদানী দ্রব্যাদিতে ফমরমালিন মেশাতে নিষিধ আগা আরোপ করেছে । ২০০৭ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ঘোষনা করেছে দ্রব্যে ফরমালিন ব্যবহার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ।
ফরমালিনের ক্ষতিকর প্রভাব কি ?
১। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেএেও ফরমালিন মারাত্মক ঝুকি কারণ হতে পারে ।কারণ হল সন্তান প্রসবের সময় নানা জটিলতা সহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে, বাচ্চাদের জম্মগত ভারে ক্রটিসহ অন্য কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে ।
২। ফরমালিন ও অন্যান্য কেমিক্যাল সামগ্রী সব বয়সী মানুষের জন্যই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ সমস্যা হতে পারে । তাছাড়া সবচেয়ে বেশি মারাক্মক শিশু ও বৃদ্ধের জন্য ক্ষতিকর উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়েছে । ফরমালিন যুক্ত খাবার খেলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে পেলে । কিডনি, লিভার ও অন্যাঅন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত মত হতে পারে মারাক্তক রোগ ।
৩। শিশুদের দৈহিক ও স্বাভাবিক বিকাশ প্রচুর বাধ্যগ্রস্ত হয় থাকে ।
৪। অস্থিমজ্জা আক্রান্ত হওয়ার ফলে রক্ত শূন্যতাসহ অন্যান্য রক্তের রোগ আক্রান্ত হতে পারে, এমনকি ব্লার্ড ক্যান্সার হতে পারে ।
পরিষেশে বলা যায়, আমরা যতটুক পারি ফরমালিন যুক্ত খাবার খাওয়া থেকে দূরে তাকব এবং আমরা যত কম খেতে পারি ততই ভাল । মানুষের শরীরে পুষ্টি যোগান দেওয়া উৎস হল ফলমূল ও শাকসবজি সেই ফলমূলের ও শাকসবজিতে যদি ফরমালিন তাকে তাহলে অনেক সমস্যা হতে পড়তে পারে । তাই আমরা ফরমালিন মুক্ত খাবার খাব কম হলেও ভাল । শরীরকে ভাল ও রোগমুক্ত রাখুন । তাই আমরা ফরমালিন যুক্ত খাবার চেনার উপায় ব্যবহার করব।