সোনালী ব্যাংকের সুবিধা সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের প্রধান অন্যতম একটি ব্যাংক। এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৭২ সাল থেকে। ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্যাংক অব বাহাওয়ালপুরের দ্বায়িত্বগ্রহনের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত করা হয়। বর্তমানে সোনালী ব্যংকের দেশ ও বিদেশ মিলিয়ে ১২১৪ টি শাখা রয়েছে । বর্তমানে দেশে শাখা রয়েছে ১২১২ টি ও বিদেশে রয়েছে ২ টি শাখা। দেশের মধ্য গ্রাম অঞ্চলের শাখা হচ্ছে ৭৪৫ টি ও শহরে শাখা ৪৬৭ টি। সোনালী ব্যাংক সরকার কতৃক হয়ে সরকারে সকল ট্রেজারী চালান গ্রহন করে থাকে। সোনালী ব্যাংক দেশের সকল সরকারি বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন , পেনশন ও অবসর ভাতা প্রধান করে থাকে। এমন কি ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি দিয়ে তাকে। সোনালী ব্যাংকের সুবিধা সোনালী ব্যাংক দেশের সামাজিক কর্মকান্ডে সহয়তা করে তাকে যেমন-সরকারে রাজস্ব আদায় , বিল গ্রহন , হজ্জ্ব ও যাকাত পান্ডের অর্থ গ্রহন করে থাকে।
সোনালী ব্যাংকের সুবিধা এর ঋনের সুবিধা কি কি ?
সোনালী ব্যাংক দেশের বিভিন্ন খাতে ঋন প্রদান করে থাকে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দেশের দারিদ্রতা ও বেকারত্ব দূরীকরনে বিভিন্ন খাতে জামানত ছাড়াই ঋন দিয়ে তাকে।দেশের কৃষি খাতে উন্নয়নের লক্ষ্যে ঋন দিয়ে নতুন নতুন উদ্যোক্তার বিকাশ ঘটিয়ে আর্থসামাজিকতা সৃষ্টি করছে।
বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের ঋন সমূহ:
১. বিশেষ কৃষি ঋণ কর্মসূচী
- উদ্দেশ্য: দেশের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কৃষকদের মধ্যে (৫.০০ একর ) ক্রমবর্ধমান হারে জামানতবিহীন সোনালী ব্যাংক ঋন প্রদান করে তাকে।
- ঋণের সীমা: বাংলাদেশ ব্যাংক এর নীতি অনুযায়ী একজন কৃষক ১৫ বিঘা (৫ একর অথবা ২ হেক্টর) পর্যন্ত ঋনের সুবিধা পাবে।
- মেয়াদ: বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক সরবরাহকৃত ফসল উৎপাদন ও ঋণ পরিশোধ সূচী অনুযায়ী।
- আবর্তন শীল শস্য ঋণ: ০৩(তিন) বছর মেয়াদে আবর্তনশীল শস্যঋণ কর্মসূচী চালু করা হয়েছে। এ কর্মসূচীর আওতায় প্রথম আবেদন ও দলিলায়নের মাধ্যমে ঋণ গ্রহণের পর শুধুমাত্র ১ম দুই বছর সুদের টাকা পরিশোধ করলেই পরবর্তী বছরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঋণটি নবায়িত হবে|
- সুদের হার: বার্ষিক ১০% সরল সুদে। ডাল , তৈলবীজ , মসলা জাতীয় ফসল হলে বার্ষিক ৪% সরল সুদে।
২. পুকুরে মৎস চাষে ঋণ
- উদ্দেশ্য: দেশের মৎস উৎপাদনের লক্ষ্যে ঋণ প্রদানে সহয়তা এবং মৎস চাষে উৎসাহিত করা।
- ঋণ সীমা: ৫.০০ লক্ষ টাকা সর্বোচ্চ।
- মেয়াদ: সর্বোচ্চ ৩ বছর।
- ইকুইটি: প্রকল্পের অনাবর্তক ব্যয়ের ৫০% এবং আবর্তক ব্যয়ের ৩০% অর্থ উদ্যোক্তাকে বহন করতে হবে।
- সুদের হার: বার্ষিক ১২% সরল সুদে।
৩. অ-কৃষি ঋণ
- অ-কৃষি ঋণ কর্মসূচীর খাত- উপখাত সমূহ: ক)হালেরগরু/মহিষ ক্রয়; খ)গবাদি পশু মোটাতাঁজাকরণ; গ) দুগ্ধ খামার স্থাপন; ঘ) ছাগলের খামার স্থাপন; ঙ)হাঁস-মুরগীর খামার স্থাপন; চ)সকল ধরনের হ্যাচারী ; ছ)মৎস্য খামার/পুকুরে মৎস্য চাষ ; জ)চিংড়ী চাষ ; ঝ) নার্সারী চাষ, ঞ)সবজি চাষ ইত্যাদি|
- ঋণসীমা: সর্বোচ্চ ১৫.০০ লক্ষ টাকা|
- মেয়াদ: সর্বোচ্চ ৩ বছর।
- ইকুইটি: প্রকল্পের অনাবর্তক ব্যয়ের ন্যূনতম ৫০% এবং আবর্তক ব্যয়ের ৩০% অর্থ উদ্যোক্তাকে বহন করতে হবে।
- সুদের হার: বার্ষিক ১১% সরল সুদে।
৪.বিশেষ বিনিয়োগ ঋণ
- উদ্দ্যেশ: দেশের গ্রামীন উন্নয়ন ,আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের খাদ্য ও শিশুদের পুষ্টি , প্রোটিন ঘাটতি পূরনে ঋণ দিয়ে থাকে।
- বিশেষ বিনিয়োগ কর্মসূচীর আওতায় খাতসমূহ: ক) দুগ্ধ খামার খ) হাঁস-মুরগীর খামার গ) মৎস্য চাষ ঘ)গরু মোটাতাজা করণঙ) ভেঁড়া/ছাগলের খামার চ) কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন ছ) গবাদি পশুর খাদ্য উৎপাদন কেন্দ্র|
- ঋণসীমা: সর্বোচ্চ ৫.০০ লক্ষ টাকা|
- মেয়াদ: ঋণের প্রকৃতি অনুযায়ী পরিশোধকাল ১থেকে সর্বোচ্চ ৩বছর পর্যন্ত|
- ইকুইটি: মোট প্রকল্প ব্যয়ের কমপক্ষে ২০% উদ্যোক্তাকে বহন করতে হবে|
- সুদের হার: বার্ষিক ১২% সরল সুদে|
৫.সামাজিক বনায়ন ঋণ
- উদ্দেশ্য:দেশের পরিবেশ , বনজ সম্পদের উন্নয় ও জনস্থাস্থ্যসুরুক্ষার জন্য ঋণ প্রদান করে তাকে।
- বিনিয়োগ খাত: বিভিন্ন ধরনের বনজ, ফলজ, ঔষধি গাছের সমন্বয়ে বাগান প্রতিষ্ঠা|
- ঋণসীমা: ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ১৫ লক্ষ টাকা। তবে এ অংকের বেশী ঋণসীমা প্রধান কার্যালয় কর্তৃক নিষ্পত্তিযোগ্য|
- পরিশোধের মেয়াদকাল: ঋণ পরিশোধের মেয়াদ হবে ১৫থেকে সর্বোচ্চ ২০বছর। বনজ বনায়নের ক্ষেত্রে ১০বছর এবং ফলজ বনায়নের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫বছর।
- ইকুইটি: মোট উৎপাদন খরচের ২০% উদ্যোক্তাকে বহন করতে হবে এবং অবশিষ্ট ৮০% ব্যাংক ঋণ প্রদান করা হবে|
- সুদের হার: বার্ষিক ১০% সরল সুদে|