স্বাস্থ্য মানুষের মূল্যবান সম্পদ। বর্তমানে আমাদেেই পৃথিবীতে অনেক ধরণের রোগের চড়াচড়ি তাকলেও আমাদেরকে এই সব রোগ থেকে বাঁচার উপায় কিছু না কিছু নিয়ম-কানুন মানতে হবে। তা না হলে আমাদের এসব রোগের কবলে পড়তে হব। তাই এসব রোগ থেকে আমাদের বাঁচতে হবে। এসব রোগ থেকে বাঁচার জন্য কিছু উপায় সমুহ দেওয়া হল। রোগ থেকে বাঁচুন এবং দেহ ও মনকে সুন্দর রাখুন। দেহ ও মন সুন্দর থাকলে পৃথিবীর সব কিছুই আপনার কাছে আপন মনে হবে।
রোগ কি? রোগ বলতে আমরা কি বুঝি?
অনেক ধরনের রোগ আছে সবগুলোর রোগের সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, সব রোগ মূলত ভাইরাস এর দ্বারা গঠিত হয়। মূলত এই সব ভাইরাস আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে থাকে ঐ সৃষ্টিকেই রোগ বলে।
রোগ থেকে বাঁচার উপায়?
আমাদেরকে অবশ্যই একটু সচেতন ভাবে চলাফেরা করতে হবে এবং সচেতন ভাবে চললে আমরা এসব রোগ থেকে বাঁচতে পারব। এবং আমাদের একটু সঠিক ভাবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে আমরা সহজ কোন রোগে আক্রান্ত না হই তা হলেই আমরা রোগে থেকে বাঁচতে পারি।
রোগ থেকে আমাদের কেন বাঁচার দরকার?
রোগ থেকে আমাদের কেন বাঁচার দরকার তার কারণ হল রোগে আক্রান্ত মানুষকে দেখতে ভাল দেখায় না। রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কোন কাজ করতে ভাল লাগেনা। কোন কাজ করতে পারেনা। কোন কিছু তার ভাল লাগেনা তাই আমাদের রোগ থেকে বাঁচার দরকার।
রোগকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়:
১. শারীরিক রোগ: শারীরিক রোগ বলতে বুঝায় শরিরের মধ্যে কোন ইনফেকন্সান বা ভাইরাস জনিত কারণে যে রোগ হয় তাকে শারীরিক রোগ বলে। কিছু কিছু শারীরিক রোগ থেকে মানসিক রোগ হয়ে থাকে। বলতে গেলে সেই সব শারীরিক রোগ ও মানসিক রোগ একটির সাথে আরেকটি সম্পর্ক যুক্ত। শারীরিক রোগ থেকে বাঁচায় উপায়:
ক) আমাদের সব সময় সচেতন থাকতে হবে। দেখে শুনে চলাচল ফেরাকরতে হবে যাতে কোন রোগে আক্রান্ত না হই।
খ) ছোঁয়াচে রোগ থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। ছোঁয়াচে রোগ মাঝে মাঝে বড় আকার ধারণ করতে পারে। যাদের ছোঁয়াচে রোগ আছে আমরা তাদের কাপর, খাবার খেয়ে রাখা কোন খাদ্য খাবনা তার যে জায়গায় আক্রান্ত সে স্থানে আমরা হাত দেব না। তার মানেই নয় যে আমরা তার সাথে কখা বলবনা বা তার সাথে চলাফেরা কর বনা এটা নয় চলাফেরা করতে পারবেন কথা বলতে পারবেন। কয়েকটি ছোঁয়াচে রোগ হল: দাঊদ, বসন্ত, একজিমা, ঘামাচি, খুশকি, স্ক্যাবিস ইত্যাদি।
গ) শরীরের কিছু ছোট ছোট রোগের লক্ষণ বুঝা গেলেও সেগুলো বড় রোগের কারণ হতে পারে। কিছু ছোট ছোট রোগ অবহেলার কারণে সেটি বড় রোগের আকার ধারণ করতে পারে তাই আমরা কোন রোগকে অবহেলা করবনা।
ঘ) পানি বাহিত রোগ থেকে আমাদের বাঁচতে হবে সেই সব রোগ একটি মানুষরে অবস্থা খারাপ করে দিতে পারে। তাই সে সব রোগ থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। কয়েকটি পানি বাহিত রোগের নাম: উদরাময়, টাইফয়েড় জ্বর, সিসটোসোমায়োসিস, হেপাটাইটিস, হেপাটাইটিস “ই”, হেপাটাইটিস “বি”, হেপাটাইটিস “সি” ইত্যাদি।
ঙ) কোন রোগ হলে দীর্ঘ্য স্থায়ী না করে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কোন রোগকে দীর্ঘ স্থায়ী করলে সেটি বড় আকার ধারণ করতে পারে। তাই আমাদের উচিত ছোট রোগ বলে অবহেলা না করা।
চ) যদি কারো বড় কোন রোগ হলে আমাদের উচিত সবাই তার পাশে থাকা এবং সাহায্য করা উচিত। তাকে অবহেলা করা উচিত নয় এবং তাকে এরিয়ে চল।
কোন খারাপ খাবার বা কোন বাঁশি খাবার খাওয়া উচিত নয় এগুলো স্বাস্থ্য পক্ষে ক্ষতিকর।
জ) যদি কারো কোন ধরণের বড় রোগ হয় হলে সে যেন মানসিক ভাবে ভেঙ্গে না পরে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
২. মানসিক রোগ: মানসিক রোগ বলতে আমরা যা বুঝি মানসিক রোগ হচ্ছে রোগীর আচার ব্যবহার, অস্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করে থাকে ও মানসিক রোগীর সবকিছু কার্যক্রম অস্বাভাবিক লাগে। মানসিক রোগ শারীরিক রোগের মতই এক ধরণের রোগ এসব রোগ থেকে এখনো মানুষ অজ্ঞ। তাই মানসিক রোগকে অবহেলা করা উচিত নয় এটি এক ধরণের মারাক্ত রোগ এটি একটি মানুষকে মৃত্যৃর দিকে দাবিত করতে পারে।
মানসিক রোগ কেন হয়?
মানসিক রোগ হয় মুলত কোন একটি জিনিসকে নিয়ে বারবার চিন্ত করা এবং কল্পনা করা তার পর সেই কল্পনার ভেতর থেকে বের হয়ে না আসতে পারাকেই হল মানসিক রোগ।
মানসিক রোগ থেকে বাঁচায় উপায়:
ক) মানসিক ও মন থেকে চাপ দূর করার জন্য আমাদেরকে মেডিটিশন করতে হবে এটি মানসিক ও মনের একটি কার্যকরী ব্যায়াম।
খ) নিজেকে সব সময় ব্যস্ত রাখুন নিজেকে ব্যস্ত রাখলে কোন চিন্ত মাথায় আসবেনা। যদি ব্যস্ত না থাকে তাহলে মাথাকে শয়তান কারখানা বলা যায়, তাই আমাদের উচিত সব সময় ব্যস্ত থাকা।
গ) ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলুন মনের মধ্যে ক্ষোভ রাখা যাবেনা, ক্ষোভ রাখলে সেটি হৃদরোগের বড় কারণ হতে পারে। এটি একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে।
ঘ) বাস্তববাদী হওয়া ভবিষ্যতে কী হবে বা হতে পারে তার আশষ্কা না করে বর্তমানে কি হচ্ছে তা দেখা তা রিয়েলাইস করা।
ঙ) নির্ভুল হওয়ার চিন্তা বাদ দিন কারণ বেশি করে এর পিছনে সময় দিলে এর কল্পনার ভিতরে আপনি ঢুকে যাবেন।
চ) ক্যাফেইন নেওয়া কমিয়ে দিন ক্যাফেইন মানুষের ইন্দ্রিয়গুলোকে সজাগ করে তুলে যা মানসিক চাপ বর্ধক হরমোনের পরিমাণকে বাড়িয়ে দিতে পারে। সেটি একজন মানুষের জন্য ভাল নয়।
ছ) আপনার সমস্যার একটি তালিকা তৈরি করুন এবং পরে কিছু সমস্যা সমাধান করার জন্য একজনের কাছে পরামর্শ নিন। এরকম কিছু ছোট ছোট সমস্যা আছে যা মানুষের তাকেই। এ নিয়ে চিন্তা করা কোন কারণ নেই।
জ) বন্ধুদের সঙ্গে বেশি করে সময় কাটানো চেষ্টা করুন তাহলে হৃদযন্ত্রের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাবে সম্ভব। বেশি একাকী থাকবেন না তার কারণ হল সেটি একজন মানুষের হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
ঝ) সব সময় হাসি খুশি থাকার চেষ্টা করুন তাহলে মানসিক রোগের হাত থেকে বাঁচা সম্ভব।
ঞ) যদি আপনি একাকী মনে করেন তাহলে কোন গেমস বা অন্য কিছু বা আঁকা আকি করতে পারে। তাহলে নিজেকে একাকীত মনে হবেনা।
ট) পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান। এবং বিশ্রাম করার জন্য সময় ভেড় করুন।
ঠ) ধর্মীয় কাজে সময় দিন এবং নিজেকে কোন মতে একা ভাবে আলাদা করার চেষ্টা করবেন না।
শারীরিক রোগ ও মানুসিক রোগ থেকে বাঁচার জন্য আপনি প্রতি দিন দোয়া পড়তে পাড়েন:
শারীরিক রোগের দোয়া হল: রাসুল(স:) ৮৯৪ নম্বর হাদিসে মধ্যে বলেছেন যে মৃত্যু ছাড়া সকল প্রকার রোগ থেকে মুক্তির ঔষধ বলা যায়।
বাংলা ইবনে আব্বাস(র:) হতে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন রুগ্ন ব্যক্তির পাশে গিয়ে সাতবার এটি পড়লে আল্লাহ তাকে এই রোগ থেকে মুক্তি দান করবে দোয়াটি হল “আসআলুল্লাহাল আযীম, রাব্বাল আরশিল আযীম, আঁই য়্যাশ্ফিয়াক” এটি। যে সব হাদিসের এই দোয়াটি আছে তার নাম সহ পৃষ্টা হল: তিরমিযির শরীফ ৩০৮৩, আবু দাউদের ৩১০৬, আহমদ ২১৩৮, ২১৮৩, ২৩৮৮।
মানসিক রোগের দোয়া হল: অযু করে পাক পবিত্র হয়ে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলে সুরা ফাতিহা তিলাওয়াত করতে হবে তার পর সূরা তাওবার ১৪নং আয়াত পাঠ করতে হবে। তাওবার অংশটি হল “ওয়া-ইয়াশফি ছুদু-রা ক্বাওমিম মু’মিনি-ন”। পরের আয়াত হল সূরা ইউনুসের ৫৭ নম্বর “ওয়া শিফাউ’ল ফিচ্ছুদু-রি ওয়া হুদাও ওয়া রাহমাতুল লিল মু’মিনি-ন” এই আয়াতটি এটি। তার পর সূরা নহলের ৬৯ নম্বর আয়াত: “ইয়াখরুজু মিমবুতু-নিহা-শারা-বুম মুখতালিফুন, আলওয়ানুহু-ফি হি শিফা-উ লিন্না-সি”। তার পর সূরা শুআরার ৮০ নম্বর আয়াত হল: “ওয়া ইজা মারিদতু ফা-হুয়া ইয়াশফি-নি”। আর একটি আয়াত পড়তে হবে সেটি হল সূরা বনি ইসরাঈলের ৮২ নম্বর আয়াত তার উচ্চারণ হল: “ওয়া নুনাজ্জিলু মিনাল ক্বুরআ’নি মা হুয়া শিফাউও ওয়া রাহমাতিুল’লিলমু মিনি-ন”। এই আয়াত গুলো পড়লে মানসিক যে কোন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। “ইনশা’আল্লাহ”
তাই বলা যায়, উপরুক্ত যে দুই ধরণের রোগের কথা আলোচনা করা হয়েছে। এ সব রোগের প্রতিরোধের কথাও বলা হয়েছে এই গুলো আমরা মানলে আমরা এই দুই ধরণের রোগ থেকে বাঁচা সম্ভব শুধু একটু দেখে শুনে চলতে হবে তাহলেই চলবে। তাহলেই পৃথিবী সমুস্ত প্রকার রোগ থেকে বাঁচা সম্ভব। আর আমরা আমাদের র্ধমীয় কিছু কাজ করব। আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরব পারি নামাজের মাধ্যমে আমাদের শরীরের অ্ঙ্গ-প্রতঙ্গের ব্যায়াম হয়। নামাজ পড়ে আমরা আল্লাহল হুকুমও আমাদের পালন করা হল এবং শরীরের কিছু ব্যায়াম হল। নামাজের মধ্যে যে ব্যায়াম হয় এটি আমাদের নবী অনেক বছর আগে বলে গেছেন, এবং এটি চিকিৎসা বিজ্ঞানেও বলা হয়েছে।
যদি এই টিপসটি পরে ভাল লাগে তাহলে আমাদের লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করতে বুলবেননা।
“খুদা হাফেজ”