বিখ্যাত গোলাপের বাগান, হাজার বছরের পুরনো শহর, অজানা রহস্য – সব মিলিয়ে বুলগেরিয়া ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যস্তল।সব মিলিয়ে বুলগেরিয়া নামক দেশটিকে বলা হয় ইউরোপের হীরা।
গোলাপ ফুল চাষের জন্য দেশটি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। বুলগেরিয়ায় উৎপাদিত গোলাপের তেলের সুখ্যাতি বিশ্বজোড়া।
এই গোলাপের নির্যাস অত্যন্ত দুর্লভ এবং প্রতিবছর বিভিন্ন দেশে তেল রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশটি।
আঙুর চাষের জন্য বুলগেরিয়ার বেশ নাম-ডাক রয়েছে। সে জন্য তো দেশটিকে রীতিমতো আঙ্গুরের দেশ বলা হয়ে থাকে।
দেশটির মাঠি আঙ্গুর চাষের জন্য খুব উপযুক্ত।মাইলের পর মাইল জায়গা জুড়ে রয়েছে আঙ্গুরের বাগান। ইউরোপসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পানীয় তৈরিতে বুলগেরিয়ার আঙুরের বেশ কদর রয়েছে।
চষীরা ঝুড়ি ঝুড়ি আঙ্গুর তুলে নিয়ে এক একটা পিপের মধ্যে তা ঢালে।পিপের একদিকে কাটা অন্যদিকে মেঝেয় একটা ফুটো থাকে, সেখান দিয়ে আঙ্গুরের রস বেরিযে পাত্রে পড়ে।
অতিথি গেলে তাকে আঙ্গুরের রস খেতে দেয়া হয় এটাই তাদের রেওয়াজ।মজার ব্যাপার হরো বুলগেরিয়ানরা আঙ্গুর থেকে মদ তৈরি করে।
বুলগেরিয়ানদের ধারণা তাদের দেশ থেকে দইয়ের উৎপত্তি।সে জন্য তাদের মাঝে টক দই খাওয়ার রেওয়াজ অন্য খাবারের থেকে অনেক বেশি।বুলগেরিয়ানরা নিয়মিত দই ও চীজ খায় বলে এরা দীর্ঘায়ু হয়ে থাকে।
দেশটির প্রায় বাড়িতে সন্ধার পর নাচ গান হয়।সব বয়সের লোকজন নাচ করতে পছন্দ করে।সারাদিন কাজ শেষে আনন্দ বিনোধনের জন্য নিজ নিজ বাড়িতে গান ও নাচের আসর আয়োজন করে তারা।
দেশটির শহর ও গ্রামগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও গোছানো।চষীরাও বেশ সুন্দরভাবে জীবন যাপন করে সেখানে।তাদের বাড়িতেও গান বাজনা নাচ সবই চলে।
দেশটির প্রায় সব পরিবারই ছোট, একটি বা দুটি সন্তান থাকে তাদের।তারা বড় হলেই মা বাবার কাছ থেকে আলাদা হয়ে যায়।
বুলগেরিয়ার মেয়েরা মাথায় সিল্ক কিংবা পশমের স্কার্ফ বেধে বাইরে বের হয়।আবার ছেলেরা অনেকে স্যুটের ওপর ভাজ করা বড় চাদর ঝুলিয়ে দিয়ে চলাফেরা করে।এটাই তাদের ফেশন।
ভিতোশা পাহাড়ের কোলে বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ার অবস্থান। সোফিয়াকে ঘিরে রয়েছে গোলাপ ফুলের উদ্যানে। এসব বাগানে যতদুর চোখ যায় শুধু লাল,সাদা,হলুদ, গোলাপী সহ বাহারি রঙের গোলাপের দেখা মিলে।
দেশটির উত্তরের পর্বতমালাতে শীতকালে ঘন তুষারে ঢেকে যায়। ফলে শীতকালে এখানে স্কি কিংবা আইস হকির মতো উইন্টার স্পোর্টসের জমজমাট আসর বসে।
গ্রেট ব্রিটেন, জার্মানি, হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া, রাশিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের কাছে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ উপভোগ করার জন্য কৃষ্ণ সাগরের নান্দনিক সমুদ্র সৈকত খুবই জনপ্রিয়।
বুলগেরিয়ার ছোট শহর ভেলিকো টার্নোভো। এই শহরে রয়েছে সালেভেটস দুর্গ। দুর্গটি ১০০০ মিটার সুউচ্চ। এই দুর্গের জন্য ভেলিকো টার্নোভো শহর বিখ্যাত।
এছাড়া এই শহরে রয়েছে নান্দনিক স্থাপত্যের অভিজাত ভবন সহ আরও অনেক কিছু। এরকম সাংস্কৃতিক আর বহুজাতিক মিল মিশ্রণের কারণে দেশটিকে বলা হয় ইউরোপের হীরা।